প্রকাশিত: ০৬:০৬ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

খুলনা টাইগার্সের মাস্টারস্ট্রোক, ফাঁ'দে ফেলে রাসেলকে আউট
যখন আন্দ্রে রাসেল মাঠে নামলেন, তখন খুলনা টাইগার্সের পরিকল্পনা ছিল একেবারে নিখুঁত। বলটি যেটি তাকে আউট করেছিল, তা ছিল একটি ম্যানুয়ালি ডিজাইন করা ফাঁদ, যার মধ্যে দুটি লং অফ রাখা হয়েছিল—একটি ছিল স্ট্রেইট পিচের দিকে, আরেকটি ছিল ক্লাসিক লং অফ। কৌশলটি ছিল, রাসেল যেন নিজের শক্তিশালী শট লং অন দিকে মারেন এবং ঠিক সেখানেই ফাঁদে পড়ে আউট হন। নাওয়াজের টার্নিং বলের বিপক্ষে শট খেলতে গিয়ে রাসেল পড়েন সেই পরিকল্পনায়, যা ছিল খুলনা টাইগার্সের অত্যন্ত সুচিন্তিত স্ট্র্যাটেজির অংশ।
এটা বুঝতে হবে, খেলাধুলায় পরিকল্পনা শুধুমাত্র মাঠে নয়, মাঠের বাইরে তৈরি হয়। আর খুলনা টাইগার্সের ক্ষেত্রে সেটি স্পষ্ট। মেহেদী হাসান মিরাজের অধিনায়কত্ব তো প্রশংসার দাবিদার, তবে দলের আসল কৃতিত্বে কোচ তালহা জুবায়েরের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। তার কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি এবং দলের প্রতি গভীর মনোযোগ খুলনা টাইগার্সকে এমন উচ্চতায় নিয়ে গেছে, যা অনেকের কাছেই অবিশ্বাস্য মনে হয়েছে।
তালহা জুবায়েরের কোচিং পদ্ধতি অন্যান্য কোচদের তুলনায় একেবারে আলাদা। তিনি মাঠে কোনো মঞ্চনাট্যকর বা মৌন দর্শক নন। বরং, তিনি মাঠের প্রতিটি মুহূর্তে দলের সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকেন, প্রতিটি মুহূর্তে দলকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন। তার শৈলী এমন এক ধরনের ড্রামাটিক উপস্থিতি, যা খেলোয়াড়দের মধ্যে এক ধরনের সাহস ও আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করে।
আরেকটি চমৎকার দৃষ্টান্ত ছিল জিয়াউর রহমানের ব্যবহার। কেউ হয়তো জানেন না, কিন্তু জিয়াউর রহমান এমন একজন প্লেয়ার যিনি মাঠে কিছুটা সাইলেন্ট হিরো হিসেবে কাজ করেছেন। স্কোরকার্ডে তার নাম থাকত না, কিন্তু তার কার্যকরী বোলিং এবং ব্যাটিং অবস্থানটি ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। খুলনা টাইগার্সের কোচিং স্টাফ জানতেন ঠিক কখন তাকে মাঠে নামানো উচিত, আর সেটাই তাদের পরিকল্পনার পরিপূর্ণতা।
এছাড়া, মুশফিক হাসানকে দলে অন্তর্ভুক্ত করা ছিল আরও একটি সাহসী পদক্ষেপ। ইনজুরির পর ফিরে এসে তাকে দলে নেওয়া, অনেকের কাছে ছিল রিস্ক। কিন্তু তালহা জুবায়ের জানতেন, কীভাবে এই সিদ্ধান্ত দলের জন্য ফলপ্রসূ হতে পারে। তিনি জানতেন, মুশফিকের ফিরে আসার মুহূর্তে তাকে দলে নেয়া খেলার গতি পরিবর্তন করতে পারে, আর সেটাই ঘটেছে।
তালহা জুবায়েরের মতো কোচের সঠিক মূল্যায়ন খুবই জরুরি। তার নেতৃত্বে খুলনা টাইগার্স শুধু একটা তরুণ দলের উদাহরণ হয়ে দাঁড়ায়নি, বরং দেশের ক্রিকেটে স্থানীয় কোচের গুরুত্ব এবং প্রভাবও পরিস্কারভাবে প্রতিভাত হয়েছে। আমাদের মনে রাখা উচিত, বিদেশি কোচদের তুলনায় স্থানীয় কোচদেরও সমানভাবে প্রশংসা করা উচিত, কারণ তারা দেশের ক্রিকেটের একান্ত অংশ। তাদের দক্ষতা এবং কাজের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে আরও শক্তিশালী করবে।
এভাবে, কোচ তালহা জুবায়েরের মত এক সুপারস্টার কোচ বাংলাদেশের ক্রিকেটের আকাশে আরও এক নতুন তারা হয়ে উঠবেন, এটি সময়ই বলে দেবে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ জাকারিয়া ইসলাম
ঠিকানা: ৫২/৬, র্যামস উইনিটি, পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থপথ, ঢাকা-১২০৫
বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন: ০১৭২২-৫৬৮০০৮
© ২০২৫ | অল নিউজ বিডি ২৪ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ডিজাইন | অল নিউজ বিডি ২৪