প্রকাশিত: ১১:৩৮ ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আওয়ামী লীগের লিফলেট বিতরণ সরকারি কর্মকর্তার অধিকার
লালমনিরহাটের পাটগ্রামের সরকারি জসমুদ্দিন কাজী আব্দুল গণি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুকিব মিয়া সম্প্রতি আওয়ামী লীগের লিফলেট বিতরণ করে আলোচনার ঝড় তুলেছেন। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগের দাবিতে আওয়ামী লীগের লিফলেট বিতরণ করেন, যা সরকারি কর্মচারীদের জন্য নির্ধারিত শৃঙ্খলা বিধি লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করা হয়েছে।
মুকিব মিয়া, যিনি বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের ৩১তম ব্যাচের কর্মকর্তা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী, ছাত্রলীগের সোহাগ-নাজমুল কমিটির গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন, দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের পক্ষে নানা পোস্ট দিয়ে আসছেন। তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলের মাধ্যমে দেখা যায়, তিনি শেখ হাসিনার উজ্জ্বল সমর্থক এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে তীব্র সমালোচনা করছেন। ২০২৩ সালের ২৭ মার্চ তিনি শেখ হাসিনার ছবি পোস্ট করে লেখেন, "বিজয় আসবেই।"
তবে সরকারি কর্মচারী হিসেবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করা নিষিদ্ধ, এমন বিধি থাকলেও মুকিব মিয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আওয়ামী লীগের পক্ষ সমর্থন জানিয়ে একাধিক বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। তার কিছু পোস্টে তিনি লিখেছেন, "লোভে পাপ, পাপে ইউনূস", "ইউনূস বাহিনীর নির্যাতন নাৎসি হিটলারকেও হার মানায়" এবং "জঙ্গি ইউনূসের দিন শেষ"—যা সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮-এর ৩(খ) ধারার লঙ্ঘন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ গত ২০ জানুয়ারি মুকিব মিয়ার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে এবং তাকে ১০ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়।
এদিকে, মুকিব মিয়া ৬ অক্টোবর নিরীক্ষা অধিদপ্তর থেকে হবিগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে বদলি হন, কিন্তু সেখানে একদিনের বেশি উপস্থিত ছিলেন না। পরবর্তীতে তাকে লালমনিরহাটের পাটগ্রামের কলেজে বদলি করা হয়, তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তিনি গত সাড়ে তিন মাসে একদিনও কর্মস্থলে যাননি। অনলাইনে যোগদানের আবেদন করলেও তাঁর কাগজপত্র জমা পড়েনি।
মুকিব মিয়া দাবি করেছেন, তিনি কোনো বিধি লঙ্ঘন করেননি। তিনি বলেন, "ড. ইউনূস সংবিধান লঙ্ঘন করছেন, আমি তার প্রতিবাদ করছি। আওয়ামী লীগও একই প্রতিবাদ করছে, তাই আওয়ামী লীগের লিফলেট বিতরণ আমার অধিকার।" চাকরিতে যোগ না দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি জানান, তিনি অসুস্থতাজনিত ছুটির আবেদন করেছিলেন, কিন্তু চিকিৎসকের সুপারিশপত্র জমা দেননি।
সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৯-এর ২৫ (১) ধারা অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে পারবেন না বা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। এই বিধির লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে চাকরিচ্যুতি হতে পারে।
এখন প্রশ্ন উঠেছে, মুকিব মিয়া বিরুদ্ধে নেওয়া প্রশাসনিক পদক্ষেপ কীভাবে এগিয়ে যায় এবং এই বিতর্কের পরিণতি কী হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ জাকারিয়া ইসলাম
ঠিকানা: ৫২/৬, র্যামস উইনিটি, পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থপথ, ঢাকা-১২০৫
বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন: ০১৭২২-৫৬৮০০৮
© ২০২৫ | অল নিউজ বিডি ২৪ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ডিজাইন | অল নিউজ বিডি ২৪