;
নামাজে সুরার আগে-পরে পড়ার পদ্ধতি: সঠিক বিধান এবং তার গুরুত্ব

নামাজে সুরার আগে-পরে পড়ার পদ্ধতি: সঠিক বিধান এবং তার গুরুত্ব

নামাজের শুদ্ধতা এবং সঠিকভাবে তিলাওয়াত করার জন্য সুরার ধারাবাহিকতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত, সুরা ফাতিহার পর কোন সুরা পড়া হবে, তা নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে অনেক সময় বিভ্রান্তি দেখা দেয়। ফরজ বা নফল নামাজে সুরা আগে-পরে পড়ার বিষয়ে ইসলাম কী নির্দেশ দিয়েছে, সেটা জানা জরুরি।

প্রথমেই জানিয়ে রাখা উচিত যে, ফরজ নামাজে সুরার ধারাবাহিকতা রক্ষা করা একান্তভাবে প্রযোজ্য। অর্থাৎ, নামাজে সুরা ফাতিহা পড়ার পর প্রথম রাকাতে যে সুরা পড়বেন, পরের রাকাতে তার পরবর্তী সুরা পড়া উচিত। যেমন, প্রথম রাকাতে সুরা ফিল পড়ার পর পরবর্তী রাকাতে সুরা কুরাইশ পড়া যায়। কিন্তু এখানে গুরুত্বপূর্ণ যে, সুরা এক রাকাতে পড়ার পর তার পূর্ববর্তী সুরা পড়া মাকরুহ, অর্থাৎ ইচ্ছাকৃতভাবে এমন করা নিষিদ্ধ। তবে ভুলক্রমে অথবা অনিচ্ছাকৃতভাবে এমন হলে নামাজ আদায় হয়ে যাবে, কোনো সমস্যা হবে না।

নফল নামাজের ক্ষেত্রে, সুরা আগে-পরে পড়ার ব্যাপারে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। ‘দুররুল মুখতার’ গ্রন্থে বলা হয়েছে, নফল নামাজে সুরা এক রাকাতে পড়ার পর পরবর্তী রাকাতে আরেক সুরা পড়লে তাতে কোনো সমস্যা নেই, এটি মাকরুহ হবে না। তবে, সুরার ধারাবাহিকতা রক্ষা করার চেষ্টা করা ভালো, কারণ এটি নামাজের শুদ্ধতা এবং পূর্ণতা নিশ্চিত করে।

সুরার মধ্যে পরিবর্তন: কি করা যাবে, কি যাবে না?

নামাজে এক সুরা পড়ার পর যদি পরবর্তী রাকাতে অন্য কোনো সুরা বাদ দিয়ে পড়া হয়, তা মাকরুহ। উদাহরণস্বরূপ, প্রথম রাকাতে সুরা ফিল পড়ার পর পরবর্তী রাকাতে সুরা কুরাইশ বাদ দিয়ে সুরা মাউন পড়া ঠিক হবে না। তবে দুই সুরা বাদ দিয়ে পরবর্তী সুরা পড়া কোন সমস্যা তৈরি করবে না। যেমন, সুরা ফিল পড়ার পর সুরা মাউন বাদ দিয়ে সুরা কাউসার বা কাফিরুন পড়া সম্পূর্ণভাবে জায়েজ।

এছাড়া, যদি কেউ সুরা নাস পড়তে চান, তবে সেই সুরার প্রথম অংশ দিয়ে এক রাকাতে এবং বাকি অংশ দিয়ে পরবর্তী রাকাতে পড়তে হলে কমপক্ষে তিন আয়াত পড়া উচিত। তবে সেরা পদ্ধতি হলো, পুরো সুরাটি একসঙ্গে পড়া। তিন আয়াতের মানে হলো, কমপক্ষে ৩০ হরফ তিলাওয়াত করা, যা নিশ্চিত করবে নামাজের শুদ্ধতা।

নামাজের শুদ্ধতা ও সুরার ধারাবাহিকতার গুরুত্ব

এ বিষয়ে আলেমদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। কিছু আলেম সুরার ধারাবাহিকতা রক্ষা না করাকে মাকরুহ মনে করেন, আবার কিছু আলেম এটিকে ওয়াজিব হিসেবে বিবেচনা করেন। তবে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, নামাজের শুদ্ধতা রক্ষা করা। সঠিকভাবে নামাজ পড়লে, যে কোনো ভুল বা অনিচ্ছাকৃত সুরা পরিবর্তন নামাজের গ্রহণযোগ্যতায় কোনো সমস্যা তৈরি করবে না।

নামাজে সুরা আগে-পরে পড়ার বিষয়ে যে কোনো বিভ্রান্তি বা ভুলের কারণে নামাজের শুদ্ধতা হারাবে না। তবে, ইসলামের বিধান মেনে সুরার ধারাবাহিকতা রক্ষা করার চেষ্টা করা উচিত। সঠিকভাবে নামাজ পড়ার জন্য সুরার ধারাবাহিকতা এবং তিলাওয়াতের নিয়ম মেনে চললে, তা আমাদের আত্মিক উন্নতি এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে সহায়ক হবে।

প্রকাশক ও সম্পাদকঃ জাকারিয়া ইসলাম

ঠিকানা: ৫২/৬, র‍্যামস উইনিটি, পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থপথ, ঢাকা-১২০৫

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন: ০১৭২২-৫৬৮০০৮

সোশ্যাল মিডিয়াতে আমরা

info@allnewsbd24.com

allnewsbd24.info@gmail.com

© ২০২৫ | অল নিউজ বিডি ২৪ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ডিজাইন | অল নিউজ বিডি ২৪